ঢাকা,রোববার, ৫ মে ২০২৪

চকরিয়াবাসির জন্য সুখবর রোববার ১৭ মে কারো দেহে করোনা পজেটিভ ধরা পড়েনি

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::  মহামারি করোনার হটস্পর্টে পরিণত হওয়া কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলাবাসির জন্য রবিবার ১৭ মে ছিল একটি সুখবর। এদিন চকরিয়া উপজেলার একজন রোগীর শরীরেও করোনা সনাক্ত হয়নি। অথচ প্রতিদিন কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাব থেকে জেলার ৮ উপজেলার করোনা টেস্টের ফলাফল জানানো হয়। সেখানে প্রায় প্রতিদিন চকরিয়া উপজেলা থেকে একাধিক ব্যক্তির করোনা সংক্রমনের ঘটনা ধরা পড়ছে।

খুশির খবর হলো, ১৭ মে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাব থেকে ১৮৪ জন রোগীর করোনা টেস্ট ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে ২৩ জন রোগীর করোনা পজেটিভ ধরা পড়লেও অপর ১৬১ জনের শরীরে নেগেটিভ রির্পোট এসেছে।

প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, এদিন জেলার আট উপজেলার মধ্যে ২৩ জন ব্যক্তির দেহে করোনা সংক্রমন পাওয়া গেছে। তদমধ্যে আছেন কক্সবাজার সদর উপজেলায় ৯জন, পেকুয়া উপজেলায় একজন, উখিয়া উপজেলায় ৪ জন, একজন রোহিঙ্গা শরনার্থী, বান্দরবানের লামা উপজেলায় একজন ও চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় ৬জন। এছাড়াও রয়েছে একজন পুরাতন রোগী। ফলাফলে এদিন চকরিয়া উপজেলা থেকে একজন রোগীর দেহেও করোনা সনাক্ত হয়নি।

তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগেরদিন ১৬ মে পর্যন্ত চকরিয়া উপজেলায় দুই শিশুসহ ৬০ জন করোনা আক্রান্ত রোগি পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছে মাত্র ৯জন। আক্রান্তের তুলনায় সুস্থতার হার খুব কম। আক্রান্তের দিক দিয়ে চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে চকরিয়া উপজেলা। লকডাউন পুরোপুরি কার্যকর না হওয়ায় আশংকাজনক হারে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এতে আতংক বিরাজ করছে পাড়া-প্রতিবেশিদের মাঝে।

আক্রান্তদের মধ্যে চকরিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) তারভীর হোসের চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে সুস্থ হয়েছেন। চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ ফজলুল করিম সাঈদী সরকারি বাসভবনে আইসোলেটেড রয়েছেন। আক্রান্ত বেশিরভাগ রোগী নিজ বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

স্থানীয় লোকজন জানায়, চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার মুল কারণ হচ্ছে ঠিক মতো লকডাউন কার্যকর না হওয়া। আক্রান্তদের সংষ্পর্শে আসা অনেকেই হোমকোয়ারান্টাইন মানছে। তারা যত্রতত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে। এর ফলে আক্রান্তের হারও বাড়ছে।

চকরিয়া উপজেলা হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ জনের করোনা ভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ করে। ক্ষেত্র বিশেষে তা বেড়েও যায়। কিন্তু যাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয় তাদের নমুনা দেয়ার পর রেজাল্ট না আসা পর্যন্ত বাড়িতে থাকার নিয়ম থাকলেও তারা তা মানছেনা। তারা এলাকায় ঘুরাফেরা করছে।

যখনই তাদের রেজাল্ট পজিটিভ আসে তখনই তারা বাড়িতে বা হাসপাতালে আইসোলেশনে যাচ্ছে। এর ফলে তাদের সংস্পর্শে যারা ছিলো তারাও হোমকোয়ারান্টাইন মানছেনা। এরাও অবাধে চলাফেরা করছে। যার কারণে আক্রান্তের হার বাড়ছে।

চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প:প কর্মকর্তা ডা.মোহাম্মদ শাহবাজ বলেন, জেলার মধ্যে করোনা আক্রান্তের দিক দিয়ে চকরিয়া উপজেলা প্রথম রয়েছে। আক্রান্তদের অধিকাংশ বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের সাথে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। যখন যে রকম ওষুধ দেয়া দরকার তা তাদের দিচ্ছি। এই পর্যন্ত ৯জন সুস্থ হয়েছে। আরো বেশ কিছু আক্রান্ত রোগি সুস্থতার পথে রয়েছে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, চকরিয়া উপজেলার করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসনের পক্ষথেকে সর্বাত্বক প্রচেষ্ঠা অব্যাহত রয়েছে। তারপরও জনসাধারণ লকডাউন অমান্য করে চলছেন। প্রায় প্রতিদিন আমি মাঠপর্যায়ে যাচ্ছি। সাধারণ মানুষকে ঘরে ফেরাতে চেষ্ঠা চালাচ্ছি।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আক্রান্ত হওয়া রোগীদের বাড়ি লকডাউনের বিষয়ে পুলিশ, স্থানীয় মেয়র, চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর এবং মেম্বারদের বলেছি। সবাই নির্দেশনা মেনে চললে সংক্রমনের হার অবশ্যই কমে যাবে। ##

পাঠকের মতামত: